পোস্টগুলি

তাদের অন্তরে আল্লাহ মোহর মেরে দেন : সত্যিই কি তাই ?

 বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে বসে বই পড়ছিলাম। সজিদ পড়ছিল এন্থনি মাসকারেনহাস এর বই, -‘The legacy of blood’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর বিদেশী সাংবাদিকদের লেখা বই। সাজিদের অনেক দিনের ইচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর একটা ডকুমেন্টারি তৈরি করবে। তাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যত বই আছে সব খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ছে সে। আমি অবশ্য সাজিদকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য রয়ে গেছি। এসব বই পড়ার ব্যাপারে আমার যথেষ্ট অনিহা আছে। থার্ড পিরিয়ডে সাজিদ ফোন করে বলল ক্লাশ শেষে যেন ওর সাথে দেখা করি। দেখা করতে এসে আটকে গেছি। সোজা নিয়ে এলো লাইব্রেরীতে। মোটা মোটা বই গুলো নিয়ে সে বসে পড়েছে। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছে আর গুরুত্বপূর্ণ লাইন গুলো ডায়েরিতে ঠুকে নিচ্ছে। আমি আর কি করবো? সাজিদকে মুখের উপর ‘তুই বসে থাক’ বলে চলে আসা যাবেনা। তাহলেই হয়েছে। আমি ঘুরে ঘুরে শেলফে সাজিয়ে রাখা বইগুলো দেখছি। হুমায়ূন আহাম্মেদের একটি বই হাতে নিলাম। বইটির নাম ‘দীঘির জলে কার ছায়া গো’। হুমায়ূন আহমেদ নামের এই ভদ্রলোক বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয় লেখক। যদিও উনার তেমন বই আমি পড়ি নি, কিন্তু সাজিদের মুখে উনার বেশ প্রশংসা শুনি। উনার বেশ ...

শুন্যস্থান থেকে স্রষ্টার দূরত্ব

 সাজিদের কাছে একটি মেইল এসেছে সকালবেলা। মেইলটি পাঠিয়েছে তার নাস্তিক বিপ্লব ধর। বিপ্লব দা’কে আমিও চিনি। সদা হাস্য এই লোকটার মাঝে মাঝেই টি.এস.সিতে দেখা হতো। দেখা হলেই উনি একটি হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করতেন, ‘তুই কি এখন রাতের বেলা ভুত দেখিস?’ বিপ্লব দা মনে হয় হাসিটি প্রস্তুত করেই রাখতো। দেখা হওয়া মাত্রই প্রদর্শন। বিপ্লব দা’কে চিনতাম সাজিদের মাধ্যমে। সাজিদ আর বিপ্লব দা একই ডিপার্টমেন্টের। বিপ্লব দা সাজিদের চেয়ে দু ব্যাচ সিনিয়র। সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যে প্রথম নাস্তিক হয়ে গিয়েছিলো, তার পুরো ক্রেডিটটাই বিপ্লব দা’র। বিপ্লব দা তাকে বিভিন্ন নাস্তিক, এগনোষ্টিকদের বই-টই পড়িয়ে নাস্তিক বানিয়ে ফেলেছিল। সাজিদ এখন আর নাস্তিক নেই। আমি ক্লাশ শেষ করে রুমে ডুকে দেখলাম সাজিদ বরাবরের মতোই কম্পিউটার গুতাচ্ছে। আমাকে দেখা মাত্রই বলল, ‘তোর দাওয়াত আছে।’ -‘কোথায়?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম। সাজিদ বলল, -‘বিপ্লব দা দেখা করতে বলেছেন।’ আমার সাথে উনার কোন লেনদেন নেই। আমাকে এভাবে দেখা করার হেতু কি বুঝলাম না। সাজিদ বলল, ‘ঘাবড়ে গেলি নাকি? তোকে একা না আমাকেও।’ এই বলে সাজিদ দা’র মেইলটি ওপেনকরে দেখাল। মেইলটি হুবহু এর...

তাকদির বনাম স্বাধীন ইচ্ছা: স্রষ্টা কি এখানে বিতর্কিত?

  সাজিদের ব্যাগে ইয়া মোটা ডায়েরি থাকে সবসময় মধ্যমধ্যেরিটা প্রাগঐতিহাসিক আমলের কোন নিদর্শনের মত। জায়গায় জায়গায় আছে। ছেড়া জায়গার কোনটাতে সুতো সেলাই করা, কোন জায়গায় আটা দিয়ে প্রলেপ লাগানো, কোন জায়গায় ট্যাপ করা। এই মধুর মধ্যে সে তার জীবনের ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। এই ডায়েরির কোন এক মাঝামাঝি জায়গায় সাজিদ আমার সাথে প্রথম সাক্ষাতের ঘটনাটিও ঘটল। তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয় টি.এস.সি.তে। সে আমার সম্পর্কে ফল ফল, – 'ভ্যাবালা সময় একটা ছেলের সাথে দেখা হল আজ। দেখতেই মনে হবে, প্রস্তুতির কঠিন বিষয় কোন বিষয়ের সেরূপ না। কথার পর বুঝলাম, এই ছেলে অত্যন্ত জ্ঞানী, কিন্তু বোকা। ছেলেটির নাম- আরিফ। ' সম্পূর্ণ তারিখ দেওয়া –' ০৫/০৩/০৯ এই ডায়াডেরে পথেন ফাঁস ব্যক্তিদের কথাও লেখা আছে। একবার কানাডার টরেন্টোতে সাজিদ তার বাবার সাথে একটি অফিসিয়াল ট্যুরে মুসলিম। সেখানে অনেক সেলেব্রিটির সাথে বিল গেটসও আমন্ত্রিত ছিলেন। বিল গেটস সেখানে মিনিট মিনিটের জন্য বক্তা পাঠাতেন। সে সূত্রটি জাফর ইকবালের সাথে সাজিদের একবার বইমেলায় দেখা যায়। সে বৈকল বই মেলায়ফর প্রদেশের বই 'একটুখানি বিজ্ঞান' ...

একজন অবিশ্বাসির বিশ্বাস - আরিফ আজাদ

 আমি রুমে ঢুকেই দেখি সাজিদ কম্পিউটারের সামনে উবুঁ হয়ে বসে আছে। খটাখট কি যেন টাইপ করছে হয়তো। আমি জগ থেকে পানি ঢালতে লাগলাম। প্রচন্ড রকম তৃষ্ণার্ত। তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাবার জোগাড়। সাজিদ কম্পিউটার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,- ‘কি রে, কিছু হইলো?’ আমি হতাশ গলায় বললাম,- ‘নাহ। ‘ – ‘তার মানে তোকে একবছর ড্রপ দিতেই হবে?’- সাজিদ জিজ্ঞেস করলো। আমি বললাম,- ‘কি আর করা। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। ‘ সাজিদ বললো,- ‘তোদের এই এক দোষ,বুঝলি? দেখছিস পুওর এ্যাটেন্ডেন্সের জন্য এক বছর ড্রপ খাওয়াচ্ছে, তার মধ্যেও বলছিস, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। ভাই, এইখানে কোন ভালোটা তুই পাইলি,বলতো?’ . সাজিদ সম্পর্কে কিছু বলে নেওয়া দরকার। আমি আর সাজিদ রুমমেট। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রো বায়োলজিতে পড়ে। প্রথম জীবনে খুব ধার্মিক ছিলো। নামাজ-কালাম করতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কিভাবে কিভাবে যেন এগনোষ্টিক হয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে স্রষ্টার উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে এখন পুরোপুরি নাস্তিক হয়ে গেছে। ধর্মকে এখন সে আবর্জনা জ্ঞান করে। তার মতে পৃথিবীতে ধর্ম এনেছে মানুষ। আর ‘ইশ্বর’ ধারনাটাই এইরকম স্বার্থান্বেষী কোন মহলের মস্...

আমারে আমি খুজিয়া বেড়ায় - আরিফ আজাদ

 ভিন্ন ভিন্ন কিছু-আরিফ আজাদ প্রথম প্রকাশ : একুশে বইমেলা ২০২২ . নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কুরবানি, আমার জীবন এবং আমার মরণ একাধিক কেবল বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তালার জন্য। . পাঠকের মন্তব্য [এক] বেলা ফুরাবার আগে আমার অনন্য বই এক আত্মান্নয়নমূলক। সাধারণ জীবনতান্ত্রিক নিয়ম টিপসগুলো এত সুন্দর আলোচনায় আমি ইতোপূর্বে কখনো পড়ি। জীবনমুখীগুলো খুঁজে বের করতে গিয়ে আমার ইতিহাসের বই থেকে আমি ইতিহাস নিয়ে শিক্ষা নিয়েছি। পশ্চিমের মাল্টা জীবনের বিপরীতে কীভাবে জীবনযাপন পদ্ধতি প্র্যাক্টিসিং- জীবন হিসাবে সাজানো যায়, তার অনুপ্রেরণা রয়েছে এই বইয়ে। আমাদের মনে জীবন– এক. দুনিয়ার জীবন, দুই. আখিরাতের জীবন। দুনিয়ার জীবনপদ্ধতি হচ্ছে আখিরাতের জীবন ইনভেস্টমেন্ট। মৃত্যুপরবর্তী ইনভেস্টের সিকিউরিটি নিশ্চিত করে দুনিয়াকে কেন্দ্র করে এবং উপজীব্য করে অতিবাহিত করা যায়, সে বিষয়ের প্রতিপাদ্য চিত্র বেলা ফুরাবার আগে। উদভ্রান্ত, উদাসীন জিনিষ পাটান থেকে মানুষের ফিরছে জীবন নতুন অনুচ্ছেদ। মুক্তির শীতল পরশে নতুন স্বাধীনতা বার্তা বইছে। জোট বেপর স্রোতনি বাঁকোয়া। জীবন এই বেপরোয়া স্রোতকে আমরা নতুন জাগরনে উত্তরালে। আস...